Header Ads Widget

ফরিদপুরে কওমি মাদ্রাসায় প্রযুক্তির ছোঁয়া

 ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায় ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি ডিজিটাল বাংলাদেশের অংশীদার হতে আধুনিক প্রযুক্তির শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে রিফাত কওমি মাদ্রাসা ও এতিমখানার কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায় ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি ডিজিটাল বাংলাদেশের অংশীদার হতে আধুনিক প্রযুক্তির শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে রিফাত কওমি মাদ্রাসা ও এতিমখানার কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। ছবি: সময় সংবাদ থেকে নেওয়া 


হা-মীম গ্রুপের অর্থায়নে মাদ্রাসায় একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র উদ্বোধন করেন গ্রুপের চেয়ারম্যান মোতালেব হোসেন এবং গ্রুপের পরিচালক বেলাল হোসেন।
 

পদ্মার দুর্গম চরের অবহেলিত মানুষের মাঝে শিক্ষার মানদণ্ড পৌঁছে দিতে উপজেলার মৌলভীরচরের নছরউদ্দিন মুন্সির ডাঙ্গি এলাকায় হা-মীম গ্রুপের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক এ. কে. আজাদ প্রতিষ্ঠা করেন রিফাত কওমি মাদ্রাসা ও এতিমখানাটি। মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি কম্পিউটার শিক্ষার সুযোগ তৈরি একটি নজিরবিহীন ঘটনা বলে উল্লেখ করেন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।


শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুজন প্রশিক্ষক দিয়ে মাদ্রাসার একটি আলাদা কক্ষে ৫ টি কম্পিউটার দিয়ে একটি প্রশিক্ষন কেন্দ্রর উদ্বোধন করা হয়। ২০১০ সালে কওমি মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই সুনামের সঙ্গে মাদ্রাসাটি পরিচালিত হয়ে আসছে। বর্তমানে মাদ্রাসায় ১২০ শিক্ষার্থী রয়েছে। মাদ্রাসাতে নূরানী বিভাগ, নাজেরা বিভাগ এবং হেফ্জ বিভাগে শিক্ষার্থীরা আরবি, বাংলা, ইংরেজি এবং অংক বিষয়ে শিক্ষা নিয়ে থাকতেন।
 

নতুন করে কম্পিউটার প্রশিক্ষন ক্লাস যুক্ত হওয়ায় আনন্দিত প্রকাশ করে মাদ্রাসার মোহতামিম  মাওলানা মো. এরফান হোসেন বলেন, বাংলাদেশে এটাই হয়তোবা প্রথম কোনো কওমি মাদ্রাসার ছাত্ররা আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান অর্জন করতে পারবে। আমরা আমাদের ছাত্রদের ভবিষ্যত গড়তে তাদের সঠিক শিক্ষা দেব। সেই সঙ্গে যে এই অবহেলিত দুর্গম চরাঞ্চলের মানুষের জীবন মান উন্নয়নে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে এমন একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য হা-মীম গ্রুপকেও ধন্যবাদ জানান তিনি। 


মাদ্রাসার কম্পিউটার প্রশিক্ষক এনায়েত হোসেন বলেন, বর্তমান ডিজিটাল যুগ। শুধু ধর্মীয় শিক্ষা দিয়ে আগামীতে তাদের বাস্তব জীবন গড়ে তুলতে পারবে না। তাই আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া এই মাদ্রাসার ছাত্রদের জন্য একটি আশীর্বাদ। তারা কম্পিউটারে পারদর্শী হয়ে ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি প্রযুক্তির জ্ঞানও অর্জন করতে পারবে।
 

মাদ্রাসার হেফ্জ বিভাগের ছাত্র শেখ মো. হাসান বলেন, ‘আমরা খুবই আনন্দিত। আমার এ মাদ্রাসা থেকে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার শিখতে পারছি।’

চরভদ্রাসন উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান মোতালেব হোসেন মোল্লা বলেন, ‘চরাঞ্চল এলাকায় আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির যুগে ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন এইট মাইল ফলক হয়ে থাকবে। হা-মীম গ্রুপের এমডি এ. কে. আজাদের অর্থায়নে এ প্রতিষ্ঠানটি পারিচালিত হয়। তাদের অর্থায়নে এ অভাবনীয় উদ্যোগটি মাদ্রাসার ছাত্রদের ভবিষ্যতে চাকরি পেতে সহায়তা করবে। নিজেরাও স্বাবলম্বী হওয়ার পথ পাবে।
 

হা-মীম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোতালেব হোসেন বলেন, ‘বর্তমানে ইন্টারনেট, অনলাইন, ডিজিটাল মাধ্যমেই সকল ধরনের কাজ হয়ে থাকে। শিক্ষার সব কার্যক্রমও এখন অনলাইনে হয়। তাই এই শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল প্রযুক্তির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে আমাদের এ উদ্যোগ। শিক্ষার সব ক্ষেত্রে কম্পিউটারের ব্যবহার থাকলেও মাদ্রাসার কওমি সেক্টরে একদমই নেই। একজন হাফেজও কম্পিউটারে পারদর্শী হবে। ফলে তারা নিজেরাই নিজেদের কর্ম খুঁজে নিতে পারবে।’

তিনি বলেন, ‘এই অবহেলিত জনপদে শিক্ষার হার একদমই কম। হা-মীম গ্রুপের মাধ্যমে এ অঞ্চলে শিক্ষার হার বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছি। সেই সাথে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে উন্নয়নে আমাদের ফরিদপুরের বিভিন্ন এলাকায় কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’


Post a Comment

0 Comments